Tuesday 31 May 2016

ধর্মীয় দৃষ্টিতে আত্মা

ধর্মীয় দৃষ্টিতে আত্মা

যতদিন দেহে প্রাণ থাকে ততদিন এই আত্মাও এই জড় দেহে অবস্হান করে । নিজে সে কোথাও সম্পৃক্ত হয় না । কিন্তু পুনঃ পুনঃ গঠিত হচ্ছে দেহটি আত্মা নয় । দেহটি জীর্ণ হলে আত্মা জীর্ণ দেহ ছেড়ে নতুন দেহে আশ্রয় নেয় । অতএব এখানে আত্মা ও দেহ দুইটি ভিন্ন বিষয় পাওয়া যাচ্ছে ।

মানুষের দেহটাই শুধু বদলায় , জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত দেহের পরিবর্তন হয় । আত্মার কোন পরিবর্তন হয় না । এই আত্মার বর্ণনা করে শ্বেতাশ্বর উপনিষদে বলা হয়েছে যে , এর আয়তন কেশাগ্রের দশ সহস্ত্র ভাগের একভাগের সমান ।

বালাগ্র শতভাগস্য শতধা কল্পিতস্য চ ।
ভাগো জীবঃ স বিজ্ঞেয় স চানস্ত্যায় কল্পতে ।। শ্বেতা(৫/৯)
গীতায় ও ঠিক সেভাবেই বলা হয়েছে :
কেশাগ্রশতভাগস্য শতাংশর সদৃশাত্মকঃ
জীবঃ সূক্ষ্ম স্বরূপোয়ং সংখ্যাতীতো হি চিত্‍কণঃ ।।

সুতরাং এর থেকে আমরা বুঝতে পারি যে,জীবাত্মা হচ্ছে এক একটি চিত্‍ কণা,যার আয়তন পরমাণুর থেকেও অনেক ছোট এবং এই জীবাত্মা বা চিত্‍কণা সংখ্যাতীত । এই অতি সূক্ষ্ম চিত্‍কণাগুলোই জড় দেহের এবং চেতনার মূল উত্‍স । আত্মা এত সূক্ষ্ম যে তা অণুবীক্ষণ যন্ত্রে পর্যন্ত দেখা যায় না ।

বিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে আত্মা:

পৃথিবীতে এমন কিছু বস্তু তথা পদার্থ(Matter)র য়েছেযায় না । কেবল জায়গা দখল করে ও ওজন আছে । পদার্থের যে তিনটি গুণাবলী যথাঃ ওজন , অবস্হান , আকার ও আয়তন রয়েছে ,বাতাসে(Air) আকার ব্যতীত অন্যান্য গুণাবলী থাকার কারণে তা একটি পদার্থ হিসেবে চিন্হিত । যেমন খালি বেলুনে বাতাস ভর্তি করে ওজন নিলে ঐ বেলুনে বাতাসের কত ওজন তা পরিমাপ করা যায় ।
বিজ্ঞানীরা এই পদার্থ সম্পর্কে ব্যাপক গবেষণা করে স্থির সিদ্ধান্তে পৌছেছেন যে , পদার্থ বিনষ্ট কিংবা সৃষ্টি হতে পারে না তবে একরূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তর হতে পারে ।

বস্তুর অবিনাশীতাবাদ সূত্রে -

"Matter can not be destroyed, can not be created but can shaped from one to another "

একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বুঝে নেয়া যাক । আমরা জানিজল একটি তরল পদার্থ । জলকেউত্তপ্ত করলে তা বাস্পে পরিণত হয় । জলের এই অবস্হাহচ্ছে বায়বীয় অবস্হা । একইভাবে তরল জলকে কম তাপমাত্রায় রাখলে বরফ হয়েযায় । বরফ হচ্ছে কঠিন পদার্থ । একই জলের তিনটি অবস্হা থাকায় কোনটার বিনাশ সম্ভব হয় না বরং একটি থেকে অন্যটির অহরহ রূপান্তর হচ্ছে ।

লিখছেন - পূর্নেন্দু আচার্য

0 comments